এসএম বিশাল: রাজশাহী নগরীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে ভূয়া ডিবি ও সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণ, প্রাণ নাশের হুমকী এবং চাঁদা আদায় চক্রের মূলহোতাসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করে করেছ ডিবি পুলিশের একটি দল ।
গত ২৫ ফেব্রয়ারি এ ঘটনায় বেলা ১২টার দিকে ভুক্তভোগী চারঘাট শাখারঅগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার বকুল কুমার সরকার(৩৩) মহানগর ডিবি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নগরীরর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আটককৃতরা হলো, এ ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী এবং সাবেক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিপাহী চারঘাট থানা এলাকার মোঃ মনোয়ার হোসেন(৩৬), মোসাঃ সেলিনা আক্তার সাথী (২৫), একই এলাকার মোঃ খাইরুল ইসলাম(২৬) ও পটুয়াখালী জেলার রাংগাবালী থানা এলাকার মোঃ তুহিন সরকার(৩২)।
রাজশাহী মেট্রপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক জানান,
মুল পরিকল্পনাকারী মনোয়ার হোসেন অপর প্রতারক চক্রের সদস্য মোসাঃ সেলিনা আক্তার সাথীকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন জনৈক মোঃ রিয়াজুল ইসলামের কাশিয়াডাঙ্গা থানাধীন নতুনপাড়া(রাণীদিঘী), রাজশাহী এর বাসার তৃতীয় তলা ভাড়া নেয়।
পরবর্তীতে মোসাঃ সেলিনা আক্তার সাথী পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভূক্তভোগী ব্যাংকের ম্যানেজার বকুল কুমার সরকারকে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপরোক্ত ভাড়া বাসায় কৌশলে ডেকে নেয় এবং পার্শ্বের কক্ষে লুকিয়ে থাকা অপর উপরোক্ত প্রতারক চক্রের সদস্যদের সংকেত দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে নেয়।
এ সময় প্রতারক মনোয়ার ডিবি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে, প্রতারক তুহিন সাংবাদিক এবং প্রতারক খাইরুল ডিবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে ভূক্তভোগীকে গ্রেফতারের হুমকী দেয়।
প্রতারক খাইরুল ভূক্তভোগীর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয় এবং প্রতারক মনোয়ার ভূক্তভোগীর পিছনে নকল পিস্তল ঠেকিয়ে বলে যে, তোর কাছে যা আছে দিয়ে দে নইলে গ্রেফতার করে মেয়েসহ কোর্টে চালান করে দিব। অপর পক্ষে প্রতারক তুহিন ভূক্তভোগীকে টাকা না দিলে মেয়েসহ তার ছবি সংবাদ পত্রে প্রকাশ করে দিবে বলে হুমকী দেয় এবং মারধর করে।
ভূক্তভোগী জীবন বাঁচাতে তার পকেটে থাকা নগদ ২৬ হাজার টাকা মুক্তিপন ও চাঁদা হিসেবে প্রতারক চক্রের সদস্যদের দিয়ে দেয়।
এছাড়াও ভূক্তভোগীর নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে তার পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে মোট-৪৪ হাজার টাকা এনে মুক্তিপন ও চাঁদা হিসাবে দিয়ে দেয়। উক্ত বিকাশ লেনদেনের তথ্য সূত্র ধরে মহানগরের বিভিন্ন এলাকা ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রতারকদের আটক করে।
এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেবে নকল পিস্তল, হ্যান্ডকাফ, ভূয়া ডিবি জ্যাকেট, ৬টি মোবাইল ১০০ ডলারের নকল নোট সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত ছবি, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও ভূক্তভোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকার মধ্য নগদ-১৫ হাজার ৫ শত টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় সংবাদ সম্মেলনে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.